কর্মসূচীর ব্যাখা – দ্বিতীয় দফা কর্মসূচী

কর্মসূচীর ব্যাখা – দ্বিতীয় দফা কর্মসূচী

“সুশিক্ষা অর্জন এবং আদর্শ চরিত্রে চরিত্রবান হবার কর্তব্যবোধ জাগ্রত করা।”

উক্ত কর্মসূচীর উদ্দেশ্য হলো সংগঠনে আগত কর্মীদের সুশিক্ষা অর্জন ও আদর্শ চরিত্র গঠনের ব্যাপারে সচেতন করে তোলা বা কর্তব্যবোধ জাগ্রত করা, এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

(★). সুশিক্ষা-

যে শিক্ষা একজন মানুষের জাগতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির বাহন, তাই সুশিক্ষা। যে শিক্ষা বিপথগামী করে, দেশ, জাতি বা নিজের কল্যাণে আসে না, যে শিক্ষা নীতি বিবর্জিত, মানবতাবোধের পরিপন্থী বা ইসলামী মূল্যবোধের পরিপন্থী, তা সুশিক্ষা নয়; বরং কুশিক্ষা। এধরণের কুশিক্ষার চেয়ে অশিক্ষা কম বিপদজনক। এজন্য বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার মূলনীতিতে সুশিক্ষাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। পাঁচদফা কর্মসূচীতে অশিক্ষা-কুশিক্ষার বিরুদ্ধে সুশিক্ষার ব্যাপক সাফল্যের প্রত্যাশায় ‘শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার’ এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও বাস্তব সকল বিষয়ের জ্ঞানের সাথে ইসলামী মূল্যবোধের সমন্বয়েই প্রকৃত পক্ষে সুশিক্ষার মৌল ধরে নেওয়া হয়েছে। পাঁচদফা কর্মসূচীতে এ ব্যাপারে আরো কিছু ধারণা সংযোজিত হয়েছে। সুশিক্ষা ও আদর্শ চরিত্র ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত। সুশিক্ষিতরাই আদর্শ চরিত্রে চরিত্রবান হতে পারে। নীতি বিবর্জিত শিক্ষা বা কুশিক্ষা আদর্শ চরিত্রের সহায়ক নয়; বরং, একজন আদর্শ ব্যক্তিকে বিপথগামী করতে পারে। তাই আদর্শ চরিত্র গঠনে সুশিক্ষার বিকল্প নেই।

*বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার তৃতীয় দফা কর্মসূচীতে সুশিক্ষার প্রসারকল্পে বিভিন্ন প্রকাশনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, এবং এ জাতীয় আদর্শ প্রকাশনার সমন্বয়ে পাঠাগার স্থাপনের ব্যবস্থাও এতে আছে। এ ব্যবস্থা শুধু সুশিক্ষা অর্জনে এবং আদর্শ চরিত্রে চরিত্রবান হতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কর্মীদের আওতায় সংগঠন কর্তৃক প্রকাশিত ও সংগৃহীত এসকল প্রকাশনা সাংগঠনিক ও অন্যান্য সাধারণ পাঠাগার হতে বিতরণ ব্যবস্থা থাকবে, বা পডার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

(★) আদর্শ চরিত্র-

হযরত রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম “উসওয়াতুন হাসানা” বা সুন্দর আদর্শের পথিকৃৎ। যেমন কালামে পাকে বলা হয়েছে-

لقد كان لكم فى رسول الله أسوة حسنة (سورة احذاب.٢١)

অর্থাৎ “তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।” (সূরা আহযাব, আয়াতঃ২১)

সুতরাং হুযুর পুরনুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই আমাদের আদর্শ চরিত্রের মডেল। আর এ মডেলের যথাযথ অনুসারী সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ও আউলিয়ায়ে কিরাম (রহঃ) এর জীবনও আদর্শ ও চরিত্রের নিদর্শন। এ জন্যই আল্লাহ পাক তাঁদের সম্পর্কে ইরশাদ করেন-

رضى الله عنهم ورضوا عنه (سورة بينة.٨)

অর্থাৎ, ‘আল্লাহ তাঁদের উপর সন্তুষ্ট, তাঁরাও আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট।’ (সূরা বাইয়্যেনা, আয়াতঃ ০৮)

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এরশাদ-

اصحابى النجوم أبيهم اقتديتم اهتديتم

‘আমার সাহাবীগণ আকাশের নক্ষত্র সমতুল্য, তোমরা যে কাউকে অনুসরণ করবে, হিদায়াত লাভ করবে।’

আউলিয়ায়ে কেরাম সম্পর্কে কোরআনের ভাষ্য-

الا ان اولياءالله لا خوف عليهم ولا هم يحزنون.الذين آمنوا وكانوا يزقون لهم البشرى فى الحياة الدنيا وفى الاخرة(سورة يونكس.٦٢)

‘আল্লাহর-অলীগণের জন্য কোন ভয় নেই; নেই কোন পেরেশানী। যারা ঈমান এনেছে, এবং তাক্বওয়া অর্জন করেছে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের সুসংবাদ।” (সূরা ইউনুছ, আয়াতঃ ৬২)

সুতরাং দেখা যাচ্ছে- আল্লাহর অলীগণ দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানে সাফল্য অর্জনকারী আদর্শ। কাজেই একজন মানুষের আদর্শ চরিত্র গঠন করে উভয় জাহানে কল্যাণ লাভে আল্লাহর আলীগণকে আদর্শ হিসেবে অনুসরণ করা কর্তব্য। আর আল্লাহর অলীগনের পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘যারা ঈমান এনেছেন, এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছেন’।

সংগ্রহ ও বিতরণ।
*এ সংক্রান্ত রচনা প্রতিযোগিতা, বক্তৃতা প্রতিযোগিতা আয়োজন।
*অনুগামী, সহগামী, সভ্য সিলেবাসে সুশিক্ষা ও আদর্শ চরিত্র ভিত্তিক প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করণ ও পরীক্ষা গ্রহণ ইত্যাদি। সুশিক্ষা অর্জন ও আদর্শ চরিত্রের চরিত্রবান হওয়া প্রত্যেকের একান্ত কর্তব্য।

মূলতঃ এ কর্তব্যবোধ জাগ্রত করাই দ্বিতীয় দফা কর্মসূচীর লক্ষ্য।